টাঙ্গাইল জেলা ঢাকা জেলার উত্তর দিকে অবস্থিত, যার পূর্বে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ, পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ, উত্তরে জামালপুর আর দক্ষিণে মানিকগঞ্জও অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝামাঝি অঞ্চলের জেলা টাঙ্গাইল যার জনসংখ্যা প্রায় ৩৮ লক্ষ। ৯৩% মোসলমান, ৬.৫% হিন্দু আর ০.৪% খ্রীস্টান রয়েছ্ । টাঙ্গাইল জেলার আয়তন ৩৪১৪২৮ বর্গ কিলোমিটার। এই জেলায় ১২ টি উপজেলা রয়েছে।
কিভাবে যাবেন টাঙ্গাইল? How to Go tangail?
আপনি (১) ব্যক্তিগত গাড়ী, (২) বাস বা (৩) ট্রেন করে যেতে পারেন টাঙ্গাইল।
ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের দুরত্ব গাজীপুরের রাস্তা দিয়ে গেলে ৮৫ কিলোমিটার (প্রায়), বিকল্প রাস্তায় আশুলিয়া দিয়ে গেলে ৯০ কিলোমিটার (প্রায়)
(১) নিজস্ব গাড়ী নিয়ে গেলে টাঙ্গাইল যেতে আপনার সময় লাগবে দেড় ঘন্টা থেকে দুই ঘন্টা । আপনি আশুলিয়া অথবা গাজীপুর হয়ে যেতে পারেন্ ।
(২) বাস করে যাওয়ার জন্য আপনাকে যেতে হবে মহাখালী বাস স্টেন্ড। এখান থেকে বেশ কয়েকটা কম্পানীর বাস ঢাকা-টাঙ্গাইল-ঢাকা চালাচল করে। নিরাল ও সোনিয়া বাস তুলনামূলকভাবে ভাল।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-ঢাকা বাসগুলোর নাম: Dhaka-Tangail-Dhaka Bus Services
- নিরালা (নন স্টপ)
- সোনিয়া (এসি)
- সকাল সন্ধ্যা
- ঝটিকা,
- ধলেশ্বরী
- বিনিময়
এছাড়া উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলোও টাঙ্গাইল হয়ে আসা-যাওয়া করে।
ছাড়ার সময়ঃ সকাল ৬ টা থেকে সন্ধা ৭ টা পযর্ন্ত প্রতি ৩০ মিনিট পর পর গাড়ী ছাড়ে।
বাস ভাড়াঃ ঢাকা-টাঙ্গাইল-ঢাকা বাস ভাড়ার পরিমান ১২০ টাকা, ১৬০ টাকা, ২০০ টাকা, ২৫০ টাকা (এসি)।
(৩)আপনি ট্রেনে করে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল যেতে পারেন আরামদায়কভাবে
ঢাকা থেকে কয়েকটি ট্রেন টাঙ্গাইল হয়ে আসা যাওয়া করে।
ঢাকা টু টাঙ্গাইল ট্রেনের সময়সূচী Dhaka to Tangail Train Schedule
ট্রেনের নাম – ঢাকা থেকে ছাড়ার সময়
- পদ্ম – ২৩:৪৫ টা
- সুন্দরবন – ৬:৩০ টা
- নীল সাগর – ৮:১৫ টা
- একতা – ৯:৩০ টা
- লোকাল – ১১:৪০ টা
- সিল্কসিটি – ১৪:৪০ টা
- চিত্রা – ১৯:১০ টা
- দ্রুতযান – ১৯:৫০ টা
- লালমনি – ২১:৩০ টা
ট্রেনে টাঙ্গা্ইল যেতে চাইলে অবশ্যই আগে টিকেট কিনে নিবেন। অনলাইনে ক্রেডিট কাড ব্যাবহার করে টিকেট ক্রয় করা যায়।
- See all other trains schedule
কিভাবে যাবেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে? Mawlana Bhashani Science and Technology University?
টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড় হতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরত্ব মাত্র ৩.৭ কিলোমিটার। সিএনজি বা ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা রিজাভ বা শেয়ার করে যাওয়া যায়। রিজাভ নিলে অটোরিক্সা ভাড়া নিবে ৮০ টাকা থেতে ১০০ টাকা।
আপনি নিশ্চয়ই জানেন টাঙ্গাইল কিসের জন্য বিখ্যাত?
টাঙ্গাইল ১) তাঁতের শাড়ী ও ২) পোড়াবাড়ীর মিষ্টির জন্য বিখ্যাত।
১) টাঙ্গাইলের হাতের তৈরি তাঁতের শাড়ি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সুপরিচিত ও জনপ্রিয় । বিয়ে, পারিবারিক অনুষ্ঠান, পয়েলা বৈশাখ, নানা ধরনণর বাঙ্গালী উৎসবে টাঙ্গাইল শাড়ী এ দেশের রমণীদের প্রিয় বস্ত্র। বিভিন্ন ধরণের নকশা, ফুল, চিহ্ন, ইত্যাদি টাঙ্গাইল শাড়িতে নিপুণভাবে আঁকা হয়। এতে নানা রঙের সুতা, জরি ও সিলক্ ব্যবহার করা হয়। এ জেলার সদর উপজেলা, দেলদুয়ার, কালিহাটি উপজেলায় প্রচুর পরিমাণ তাঁত শিল্প রয়েছে। এক সময় হাতচালিত তাঁত শাড়ীর জনপ্রিয় হলেও এখন বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যৎ চালিত তাঁতের শাড়ী তৈরি হয়।
কোথায় পাবেন টাঙ্গাইল শাড়ী? Where to buy Tangail Sharee?
আপানার হাতে যদি সময় থাকে আপনি সরাসরি তাঁতের বাড়ী চলে যেতে পারেন। নিজের চোখে দেখে আসতে পারেন তাঁতী কিভাবে নিখুঁতভাবে কাপড় বুনছে। তাঁতী বাড়ি থেকে তাঁতের শাড়ি বানানো ও কিনে নিয়ে যেতে পারেন সহজে। তাঁতী বাড়ি যাওয়ার জন্য টাঙ্গাইলি শহর থেকে একটি সিএনজি বা অটোরিক্সা যাওয়া ও আসার জন্য ঠিক করে নিতে পারেন্ । আগেই জেনে নিবেন সিএনজি বা অটো রিক্সা চালক কোন তাঁতী বাড়ি সঠিকভাবে চিনে কিনা। আর ভাড়া দর-দাম করে নিতে ভুলবেন না।
যদি আপনার হাতে সময় না থাকে, আপনি চলে যাবেন টাঙ্গা্লের নিরালা মোড় হয়ে পুরাতন আদালত রোড। সেখানে দেখতে পাবেন অসংখ্যা সারি সারি শাড়ীর দোকান্ । আসল তাঁতের টাঙ্গা্ইলি শাড়ী আছে কিনা জেনে নিয়ে তারপর দোকানে ঢুকবেন। আপনি যদি হাতের তৈরি (হ্যান্ডলুম) তাঁতের শাড়ী না চেনেন আর বিক্রেতা যদি চালাক হয় আপনাকে দিয়ে দিতে পারে মেশিনের তৈরি (পাওয়ারলুম) তাঁতের শাড়ী ।
টাঙ্গাইল পোড়াবাড়ীর মিষ্টি Porabari chamcham, sweets
২) আর একটি বিশেষ জনপ্রিয় খাবার হল টাঙ্গাইল পোড়াবাড়ীর মিষ্টি। রসে ভরা দুধের ছানার তৈরী রস গোল্লা, চমচম, সন্দেশ না খেয়ে টাঙ্গাইল থেকে যাবেন না। টাঙ্গাইল শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে পোড়াবাড়ীতে না গিয়েও শহরের মধ্যেই ক্রয় করতে পারবেন পোড়াবাড়ীর চমচম ও রসগোল্লা্ । টাঙ্গাইল মেইন রোড দিয়ে নিরালা মোড়ের পাশ দিয়ে যেতে পারবেন মিষ্টি পট্টি বা মিষ্টি তৈরির দোকানগুলোতে। শহরের ভেতর যে কোন রিক্সা বা অটোরিক্সা ড্রাইভারকে নিয়ে যেতে পারেন। কয়োক মিটিটের মধ্যে আপনাকে নিয়ে যাবে চমচম ও মিষ্টি তৈরির দোকানগুলোর গলিতে। রসগোল্লা দাম নিবে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, আর পোড়াবাড়ীর চমচম এর দামও প্রতি কেজি ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে।