ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী মশা কামড়ানোর চার থেকে সাত দিন পর ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ স্পষ্টভাবে দেখা দেয়। এ রোগের কিছু সাধারণ উপসর্গ হলো :
ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ
- জ্বরের তাপমাত্রা সাধারণ ভাইরাস জ্বরের তুলনায় অনেক বেশি,
- ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বরের তাপমাত্রা উঠতে পারে।
- বিরামহীন মাথাব্যথা,
- হাড় ও হাড়ের জোড়–পেশিতে তীব্র ব্যথা,
- বমি ভাব,
- বমি হওয়া,
- গ্রন্থি ফুলে যাওয়া,
- সারা শরীরের ফুসকুড়ি,
- চোখের পেছনে ব্যথা ইত্যাদি।
ডেঙ্গু যদি প্রথমবার আক্রান্ত করে এবং এটি যদি তরুণ বয়সে অথবা শিশুদের হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ থাকে না। এমনকি তেমন জ্বরও থাকে না। টিপিক্যাল ডেঙ্গু/ ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গুতে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা
জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে থাকলে ৬ ঘণ্টা পরপর প্যারাসিটামল খান,
১০২–এর ওপরে গেলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি দেন।
বেশি বেশি ডাবের পানি,
খাওয়ার স্যালাইন ও ফলের জুস খান।
খাওয়ার রুচি অনেক কমে যাবে, তবু জোর করে হলেও খেতে থাকেন।
ব্যথানাশক ঔষুধ না খওয়া
প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ খাবেন না। কারণ, ব্যথানাশক খেলে রক্তক্ষরণ হতে পারে, এমনকি মৃত্যু হতে পারে। প্যারাসিটামল জ্বর এবং শরীর ব্যথায় কার্যকর ওষুধ।
সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু সেরে যায়। তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে। এসব ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই জটিল পরিস্থিতিগুলো হলো ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।
ডেঙ্গু শক সিনড্রম
হেমোরেজিক ফিভারের মধ্যে একধরনের রোগী রক্তপাত নিয়ে আসতে পারে। আরেক ধরনের রোগী সরাসরি শকে চলে যেতে পারে। হেমোরেজিক ফিভারের মধ্যে যেগুলো শকে চলে যাচ্ছে পাশাপাশি এক্সটেনডেট ডেঙ্গু শক সিনড্রম, সেগুলো হলো অস্থিতিশীল বা ঝুঁকিপূর্ণ। তারা মারাও যেতে পারে।
ডেঙ্গু শক সিনড্রম উপসর্গ
- ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের উপসর্গ হলো শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়া কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া।
- ত্বক শীতল হয়ে যাওয়া।
- ত্বকের ভেতরের অংশে রক্তক্ষরণের কারণে ত্বকের ওপর লাল ছোপ সৃষ্টি হওয়া।
- বমি, মল কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া,
- প্রচণ্ড পেটব্যথা ও অনবরত বমি হওয়া,
- নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ ও অবসাদ।
- কখনো মস্তিষ্কের ভেতর রক্তক্ষরণ হতে পারে।
এ রকম অবনতি দেখলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তে ফি নির্ধারণ, বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে চিকিৎসক প্রস্তুত করা ও সব হাসপাতালে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।